মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি, হত্যা করা কুফুরি

গত কয়েকদিন যাবত এই সময়ের একজন মেধাবী, বিচক্ষণ, দূরদর্শী, সৎচিন্তক, উম্মাহদরদী দাঈ আলেম, শায়খ আহমাদুল্লাহকে এক শ্রেণীর বিভ্রান্ত বিপথগামী কিছু যুবক খুব নোংরা ভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছে। আমি অত্যন্ত বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করছি যে, বিদ্যাশূন্য সভ্যশিক্ষা বিবর্জিত এই তরুণরা এই আলেমের গায়ে অশুভ, বিশ্রী বানোয়াট ও উদ্ভট সব ট্যাগ লাগিয়ে তাদের হিংসুক ও নিকৃষ্ট মনের হীনজিঘাংসার দুর্গন্ধময় স্বাদ চরিতার্থের তীব্র নেশায় মেতে ওঠেছে। তারা একটিবারও চিন্তা করছেনা যে, শায়খ আহমাদুল্লাহ কোন ভুল করে থাকলে তা নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা হতে পারে, কিন্তু কোনভাবেই তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করা যায়না। এটি সহীহ হাদীসের শিক্ষার পরিপন্থি।

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি, আর তাকে হত্যা করা কুফুরি। (সহীহ বুখারী, ঈমান অধ্যায়, হাদীস নং ৪৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৪, তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৩৫, নাসায়ী, হাদীস নং ৪১২০)।

ইসলামের এই দুঃসময় ও ক্রান্তিলগ্নকালে, ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় নিপতিত উম্মাহর এই অন্তিম মুহূর্তে যখন ঈমানের দাবী ছিল, যারা মানুষকে কুফুরি, শিরক, বিদআত, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে, কট্টোরপন্থা পরিহার করে, হিকমা, প্রজ্ঞা ও উদারতার পথ অবলম্বন করে নিরেট সত্য দীনের প্রতি আহবান করছে, নির্ভেজাল ইসলাম, আমল ও আকিদার প্রতি দাওয়াত দিচ্ছে তাদের প্রতি সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও উদারতার হস্ত সম্প্রসারিত করা, সেই মুহূর্তে রহস্যজনক কারণে তা না করে শুধুমাত্র দলবাজির অন্ধ অনুকরণে মোহগ্রস্থ হয়ে তারা এক ভয়ানক চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। তারা এ ক্ষেত্রে ইসলাম, বিদ্যা, ভদ্রতা, সভ্যতা, সততা, সৌন্দর্য ও আদর্শের সকল সীমা লঙ্ঘন করেছে। তারা ভাবছেনা যে, তাদের দীনতা, হীনতা, নীচতা, শঠতা ও পরশ্রীকাতরতা, হিংসা-বিদ্বেষের অনলে মুসলিম উম্মাহ ধাউ ধাউ করে জলছে। আফসোস! তারা একথাও জানেনা যে, তাদের এই অপকর্মের পরিণাম মহান আল্লাহ্‌র দরবারে কতটা না ভয়াবহ হবে।

আল্লাহ্‌ বলেন, ‘বলুন: আমি কি তোমাদেরকে সেসব লোকের সংবাদ দেব, যারা কর্মের দিক দিয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। তারাই সে লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিবজীবনে বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম করেছে।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত ১০৪)

সমাজের ঐক্য বিনষ্টকারী ফাসাদ, বিভাজন ও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারীদের ভালো করে জেনে রাখা উচিৎ যে, তাদের আক্রোশ ও হিংসা-বিদ্বেষের অনলে ব্যক্তি আহমাদুল্লাহর কিছু হবে না, ক্ষতি হবে গোটা মুসলিম উম্মাহর, তাওহীদের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ঐক্য ও পারস্পরিক হৃদ্যতা, ভালোবাসা ও ভ্রাতিত্তে ফাটল ধরবে, ক্ষতিগ্রস্থ হবো আমরা নিজেরাই, লাভবান হবে আমাদের শত্রুরা।

লেখক: মুফতি যাকারিয়্যা মাহমূদ মাদানী
প্রিন্সিপাল: মানাহিল মডেল মাদরাসা, মিরপুর, ঢাকা
পরিচালক: ভয়েস অব ইসলাম ও ইসলামিক গাইডেন্স।
[email protected]
২৭/৫/২০১৮

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button