আল-কুরআন একটি চিরন্তন ও জীবন্ত মু’জিযা
পবিত্র কুরআন এক চিরন্তন ও জীবনন্ত মু’জিযা । যা মুহাম্মাদ (সা)-এর নবুওয়াতের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। মুহাম্মাদ (সা) ছিলেন নিরক্ষর। তিনি কখনও কোন শিক্ষকের কাছে যাননি।আর যাননি বিদ্যা অর্জন করতে কোন স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে।জীবনে কখনও তিনি অলংকার সমৃদ্ধ কবিতা রচনা করেননি। এমতাবস্থায় জীবনের ৪০তম বছরে শাব্দিক অলংকারসমৃদ্ধ, বিষ য়বস্তুর বৈচিত্রে অনন্য এ ই কুরআনের মত গ্রন্থ রচনা করা তাঁর পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব ছিলো না। তদুপরি তিনি দৈনন্দিন কথাবার্তায় যে ভাষা ব্যবহার করতেন তার সাথে কুরআনের ভাষার কোন মিল ছিল না। তাই নিশ্চিত বলা চলে যে, কুরআন একমাত্র আল্লাহরই বাণী এবং মুহাম্মাদ (সা)-এর এক জীবন্ত মু’জিযা।
কুরআন নাযিল হওয়ার সাথে সাথে একে এমনভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে যে, এর একটি বাক্য বা শব্দ তো দূরের কথা, একটি বর্ণেও কেউ কোনদিন পরিবর্তনা আনতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও এমন কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু পূর্ববর্তী আসমান কিতাবগুলো যুগে যুগে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় এবং বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা লিখিত ও ভাষান্তরিত হ’তে হ’তে আজ এমন পর্যায়ে এসে পৌছেছে যে, ঠিক কোন ভাষায় তা অবতীর্ণ হয়েছিল এবং সে ভাষার আসল রুপ কি ছিল তা ঐ সমস্ত গ্রন্থের অনুসারীরাও সঠিকভাবে বলতে পারে না। সব কিছু মিলে তা বিকৃত রুপ নিয়েছে। কিন্তু কুরআন বিশ্বের অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হলেও তা মূল যে ভাষায় নাযিল হয়েছিল, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে হুবহু সে ভাষায়ই বিশ্বের সর্বত্র পঠিত হচ্ছে এবং ভাষান্তরের ফলে এর মানে মতলবা বা ভাবের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোন অবকাশ নেই।
কুরআন কি পরিমাণ অপরিবর্তিত রয়েছে, তার একটি জ্বলন্ত প্রমাণ এই যে, সাম্প্রতিককালে ঢাকায় মুদ্রিত এক কপি কুরআন আর কয়েক শতাব্দী পূর্বে ইরাক বা অন্য যেকোন শহরে মুদ্রিত এক কপি কুরআন পাশাপাশি মিলিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে, এই দুই কপি কুরআনের কোন বাক্যে, শব্দে, বর্ণে এমনকি কি বিন্দু বিসর্গেওকোন গরমিল নেই।এর কারণ একটিই যে, একে কেউ কোনদিন বিকৃত করতে পারবে না। এটা আল্লাহর কালাম। আর স্বয়ং তিনিই এর সংরক্ষণকারী।
মানব রচিত কোন পুস্তকের সমস্ত কপি যদি পুড়িয়ে বা পানিতে ফেলে দিয়ে ধ্বংস করা হয়, তাহ’লে হুবুহু ঐ ভাষায় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। কিন্তু কুরআন এ নিয়মের ব্যতিক্রম।কুরআনের দুশমুনরা আজ যদি বিশ্বের সমস্ত কুরআনের পান্ডুলিপি ধ্বংস করে ফেলে, তাহলেও তা হুবুহু পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে যে ভাবে পূর্বে ছিলো। তার কারণ, কুরআনেরর লক্ষ লক্ষ হাফিয রয়েছেন। এটিই একমাত্র গ্রন্থ যার অর্থ না বুঝেও আগাগোড়া অনায়াসে মুখস্ত করে নেয়া যায় এবং একারণেই বিশ্বে অন্য কোন গ্রন্থের নয়; শুধুমাত্র কুরআনেরই অগণিত হাফিয রয়েছেন। এটিও একটি কুরআনের চিরন্তন ও জীবন্ত মু’জিযা।