যে সকল কাজে মাইয়্যেত উপকৃত হয়
দু’আ করা: “হে আমাদের রব! তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের আগে আমাদের যে ভাইয়রো ঈমান এনেছে তুমি তাদেরকেও মাফ করে দাও এবং আমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদের ব্যাপারে আমাদের মনে কোনো রকম হিংসা-বিদ্বেষ রেখ না, হে আমাদের রব!, তুমি অতিশয় মেহেরবান ও পরম দয়ালু।” (সূরা হাশর: ১০)
মান্নাত রোযা আদায় করে দেওয়া: মাইয়্যেত যদি এমন কোনো রোযার মান্নত করে থাকে যা পালন করার আগেই সে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে জীবিত আত্মীয়রা মাইয়্যতেরে পক্ষ থেকে ঐ রোযাগুলো রেখে দিলে মাইয়্যেত দায়মুক্ত হয় এবং উপকৃত হয়। (সুনান আবূ দাঊদ: ৩৩০৮, ২৪০১)।
ঋণ পরিশোধ: মাইয়্যেতের কোন ঋণ থেকে থাকলে আপনজন বা অন্য কেউ মাইয়্যেতের পক্ষ থেকে তা পরশিোধ করে দিলে মাইয়্যেত এ পাপ থেকে মুক্তি পেয়ে যায়। (সহীহ বুখারী: ৬৬৯৯)
হজ্জ ও ওমরাহ আদায়: মাইয়্যেতের উপর হজ ফরয থাকলে আর কোনো কারণে তা আদায় করা ছাড়া মারা গেলে নিজের সন্তান বা আপনজনদের কেউ তার পক্ষ থেকে বদলী হজ আদায় করলে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায়। (সহীহ মুসলমি: ১৩৩৪-১৩৩৫, মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা: ১২০৮৫) এতে মাইয়্যেত হজের সাওয়াবও পেয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ।
দান-সদকা: মাইয়্যেতের জন্য দান-সদকা করার কথা বিভিন্ন হাদিসে এসেছে। এতে তারা উপকৃত হন। (মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা: ১২০৮৪)
মাইয়্যেতের জন্য নফল নামায ও নফল রোযা রাখা: এ ব্যাপারে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, এবং সাহাবায়ে কেরাম তাদের মৃত আত্মীয় স্বজনের জন্য নফল নামায, নফল রোযা রাখতেন। হজ ও ওমরাহ আদায় করতেন। (মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা: ১২০৮৪, ১২০৮৫)
নেক সন্তানের দু’আ ও আমল: সন্তান যেসব ভালো কাজ করে তার সমপরিমাণ সওয়াব মাতা-পিতাও পান, এমনকি কবরে থেকেও। যদি সওয়াব মাতা-পিতা তার সন্তানকে ভালো পথে পরিচালিত হওয়ার শিক্ষাদান করে থাকেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সন্তান হলো নিজের উপার্জিত ধন-সম্পদের মতো।” (সহীহ মুসলমি: ১৬৩১, সুনান আবূ দাঊদ: ৩৫২৮) সন্তান যত বেশি ভালো কাজ করবে মাতা-পিতা ততবেশি সওয়াব পেতে থাকবেন।
সদকায়ে জারিয়াহ: জীবদ্দশায় করে যাওয়া আমল ও দান-খয়রাত, কল্যাণমূলক কাজ যা সদকায়ে জারিয়াহ হিসেবে চলমান থাকবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যখন কোনো মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তিন প্রকারের আমল ছাড়া তার সকল আমলই বন্ধ হয়ে যায়। (ক) সদকাহ জারিয়াহ, (খ) মানুষ উপকৃত হয় এমন ইলম, ও(গ) নেক সন্তান, যে তার তার জন্য দু’আ করে।” (সহীহ মুসলিম: ১৬৩১)
লেখক: মুফতি যাকারিয়্যা মাহমূদ মাদানী
বি. এ. অনার্স, এম. এ, এমফিল: মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
প্রিন্সিপাল: মানাহিল মডেল মাদরাসা, মিরপুর, ঢাকা
পরিচালক: ভয়েস অব ইসলাম ও ইসলামিক গাইডেন্স।