![](https://voiceofislam.com.bd/wp-content/uploads/2020/12/islam..jpg)
ঘরে বসেই ইসলাম গ্রহণ করুন
প্রশ্ন: আমি জেনিফার। বয়স ২১। খ্রিস্টান। আমি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি। আমি ইতিমধ্যেই ইসলাম সম্পর্কে অনেক পড়াশোনা করেছি। আমি ইসলাম সম্পর্কে আরো জানতে চাই, তাই এ ধারা অব্যাহত রাখবো। আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হল, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি ইসলাম গ্রহণ করবো। আমি একজন সত্যিকারের মুসলিম হতে চাই। কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব তা আমি জানি না। আপনি কি আমাকে দয়া করে জানাবেন যে, আমি কীভাবে মুসলিম হবো? আমি এটাও জানতে চাই যে, আমি কি আসলেই মুসলিম হতে পারবো? আমি মুসলিম হলে স্রষ্টা কি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন? আমার উপর সন্তুষ্ট হবেন?
উত্তর: ইসলাম প্রথাসর্বস্ব কোনো ধর্ম নয়। একটি সুন্দর, সুস্থ, সুচিন্তিত জীবনাচাররের নাম ইসলাম। এর অপার সৌন্দর্য তো এটাই যে, এ ধর্মে বান্দা ও প্রভুর মাঝে কোনো মাধ্যম নেই। সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে ভিন্ন কোনো সত্ত্বার সম্পর্ক নেই। ইসলামে একজন বান্দা যেকোনো সময়, যেকোনো অবস্থায়, যেকোনো ভাবে, যেকোনো প্রয়োজনে সরাসরি আল্লাহ্কে ডাকতে পারে। তার কাছে চাইতে পারে। এ জন্য কোনো ভায়া বা মিডিয়ার দরকার হয় না। ঠিক একইভাবে ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্যমণ্ডিত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে- এ ধর্ম গ্রহণ করার জন্য কারো কোনো অনুমোদনের বা সুপারিশের প্রয়োজন নেই। বিশেষ কোনো প্রথা ও রীতির সুযোগ নেই। নেই কোনো সময় ও আনুষ্ঠানিকতার বাধ্যবাধকতা। প্রয়োজন নেই আলেম-ওলামা, স্কলার, ইমাম, দাঈ বা বিশেষ কোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের। কেননা ইসলাম খুবই সহজ ও সিম্পল একটি বিষয়। এর গ্রহণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ।
যে কেউ যেকোনো সময় চাইলে সে নিজে নিজে এক নিমিষেই তা গ্রহণ করতে পারে। ঘরে, বাইরে, পথে, প্রান্তরে, নিরালায়, নির্জনে, লোকালয়ে, আলো, আঁধারে, নিসঙ্গ, নিরবে কিংবা অন্ধকারে বন্ধ কুঠুরিতে বা মরুভূমির খোলা প্রান্তরে থাকলেও সে একা একাই ইসলাম গ্রহণ করতে পারে। এখানে নিয়মতান্ত্রিকতার কিছু নেই। শুধু বিশ্বাস ও ভক্তি দিয়ে দুটি বাক্য উচ্চারণ করতে হবে, যে বাক্য দুটিতে ইসলামের পরিপূর্ণ স্প্রিট ও মর্ম নিহিত রয়েছে।
যাতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে- মানুষের পক্ষ থেকে আল্লাহর দাসত্বের স্বীকৃতি, আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ, আল্লাহকে উপাস্য হিসেবে স্বীকার করে নেয়া, নিজের ওপর আল্লাহকে যা ইচ্ছা হুকুমদাতা হিসেবে মেনে নেয়া। যাতে রয়েছে- মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর নবী (বার্তাবাহক); তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু অহী হিসেবে নিয়ে এসেছেন সেসব অনুসরণ করা আবশ্যকীয়, তাঁর আনুগত্য হচ্ছে- আল্লাহরই আনুগত্য। যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ একীন ও বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্যবাণীদ্বয় উচ্চারণ করবে সে ইসলামে প্রবেশ করবে এবং মুসলমানদের একজন হিসেবে গণ্য হবে। মুসলমানদের প্রাপ্য যে যে অধিকার রয়েছে তার জন্যেও সেসব অধিকার সাব্যস্ত হবে এবং মুসলমানদের ওপর যে যে দায়িত্ব রয়েছে তার ওপর সেসব দায়িত্ব বর্তাবে। ইসলাম গ্রহণের পর পরই সে ব্যক্তি আল্লাহ তার ওপর যেসব আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্পণ করেছেন সেগুলো পালন করা শুরু করবে। যেমন- যথাসময়ে নামায আদায় করা, রমযান মাসে রোজা (উপবাস) পালন করা ইত্যাদি।
উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চয় পরিস্কার হয়েছে যে, আপনি এখুনি মুসলিম হয়ে যেতে পারেন। আপনি গিয়ে গোসল করে নিন এবং বলুন “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই; আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল (বার্তাবাহক)।”
আল্লাহ আপনাকে সকল প্রকার কল্যাণের তাওফিক দিন, আপনার চলার পথ সঠিক করে দিন, আপনার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লিখে দিন। যারা হেদায়েতের পথ গ্রহণ করেছে তাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।