ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া এক নয়

ট্রান্সজেন্ডার মানে লিঙ্গ পরিবর্তন। টিভিতে ট্রান্সজেন্ডার সংবাদ পাঠক দেখে খুশী হওয়ার কিছু নেই। বরং একটি শয়তানী প্রজেক্ট। স্বয়ং শয়তান এবং তার পরিচালিত সংঘগুলো এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে। এ প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াতে শয়তানের বক্তব্যটি উদ্ধৃত করা আছে- ‘আমি অবশ্যই তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, মিথ্যা আশ্বাস দেব, তাদের নির্দেশ দেব, যার ফলে তারা পশুর কর্ণ ছেদ করবে এবং তাদের নির্দেশ দেব ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১১৯)

উল্লেখ্য ইদানিং জেনেটিক মডিফিকেশনের মাধ্যমে মানবজাতির জেনেটিকস পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রও জোরেশোরে শুরু হয়েছে।

আমেরিকার বাইডেন সরকারের চাপে এবং প্ররোচনায় বিশ্বব্যাপী এসব বদমাশী ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে। যদিও বলা হয় ট্রান্সজেন্ডার। প্রকৃতপক্ষে জেন্ডারের পরিবর্তন হয়না। অপারেশন এবং হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগে যৌনাঙ্গে এবং দেহে কতগুলো অংশে কিছু বিকৃতি ঘটানো হয়। তারপর তথাকথিত ট্রান্সজেন্ডারগণ বিপরীত লিঙ্গের পোষাক পরিধান করে।
পুরুষ হয়ে নারীর আর নারী হয়ে পুরুষের বেশ ধারণকারীর উপর আল্লাহ তায়ালার লানত।

হাদিস শরীফে বর্ণিত, ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬِﻲﻥَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﺑِﺎﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻪ َﺍﺕِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﺑِﺎﻟﺮِّﺟَﺎﻝ

অর্থাৎ, প্রসিদ্ধ সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ্ তা’আলা সেই সব মহিলাদের উপর অভিশাপ করেন, যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং সে সকল পুরুষদের উপর অভিশাপ, যারা মহিলাদের বেশ ধারণ করে। (বুখারী, মিশকাত হাদিস নং ৪৪২৯)

অন্য হাদিসে পাকে এসেছে, ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻌَﻦَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞَ ﻳَﻠْﺒَﺲُ ﻟُﺒْﺴَﺔَ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓِ ﻭَﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓَ ﺗَﻠْﺒَﺲُ ﻟُﺒْﺴَﺔَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ

আবূ হুরায়রাহ রা. বলেন, ‘রাসূল সা. সেই পুরুষের ওপর অভিশাপ করেছেন, যে মহিলার পোষাক পরিধান করে এবং সে মহিলার উপর অভিশাপ করেছেন যে পুরুষের পোষাক পরিধান করে। (আবূদাঊদ, মিশকাত, হাদিস নং ৪৪৬৯)।

অপর এক বর্ণনায় এসেছে, ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻌَﻦَ ﺍﻟْﻤُﺨَﻨَّﺜِﻴﻦَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﺮَﺟِّﻞﺍَﺕِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ .

ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ‘নবী করিম সা. হিজড়ার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন এবং পুরুষ বেশ ধারণকারী নারীর উপর অভিশাপ করেছেন‘ (বুখারী, মিশকাত, হাদিস নং ৪৪২৮)।

সহিহ হাদিসে বর্ণিত, ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻳَﺴَﺎﺭٍ ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑِﻦْ ﻋَﻤْﺮٍﻭﻋﻦِ ﺍﻟﻨَﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻻَ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮْﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺍﻟْﻌَﺎﻕُّ ﻟِﻮَﺍﻟِﺪَﻳْﻪِ ﻭَﺍﻟﺪَّﻳُّﻮﺙُ ﻭَﺭَّﺟُﻠَﺔَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ .

আবদুল্লাহ বিন ইয়াসার রা. বর্ণিত, ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূল সা. বলেন, ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না-
(১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান।
(২) বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদানকারী।
(৩) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী’ (নাসাঈ)।

প্রিয় নবীর অমীয় বাণী, ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﻠَﻴْﻜَﺔَ ﻗَﺎﻝَ ﻗِﻴﻞَ ﻟِﻌَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﺇِﻥَّ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﺗَﻠْﺒَﺲُ ﺍﻟﻨَّﻌْﻞَ ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻠَﺔَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ

আবূ মুলায়কা রা. বলেন, একদা আয়েশা রা. কে বলা হল, একটি মেয়ে পুরুষের জুতা পরে। তখন আয়েশা রা. বললেন, ‘রাসূল সা. পুরুষের বেশধারী নারীর প্রতি অভিশাপ করেছেন।’ (আবূদাঊদ, মিশকাত, হাদিস নং ৪৪৭০)

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button