শয়নকালে দুআ ও যিকির

১৷ বিছানায় শয়ন করে দুই হাত একত্রিত করে তাতে ফুঁ দিয়ে, সূরা ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস পড়ে যথাসম্ভব সারা দেহে বুলিয়ে নিতে হয়। এমনটি ৩ বার করতে হয়। (কুঃ ৯/৬২, মুঃ ৪/১৭২৩)

২। শয়ন করে ‘আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে আল্লাহর তরফ থেকে এক রক্ষী নিযুক্ত হয়ে যায় এবং শয়তান ঐ পাঠকারীর নিকটবর্তী হতে পারে না। (বুঃ ৪/৪৮৭)

৩। সূরা বাক্বারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করলে সকল প্রকার নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট। (বুঃ ৯/৯৪, মুঃ ১৫৫৪)।

৪।

اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا

উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু অ আহয়্যা।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার নামে মরি ও বাঁচি। (বুখারী ৬৩১৪, মুসলিম ৭০৬২নং)

৫। বিছানা থেকে উঠে গিয়ে পুনরায় শয়ন করলে তা ঝেড়ে শুতে হয়। শয়ন করে এই দুআ পড়তে হয়,

بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ

উচ্চারণঃ- বিসমিকা রাব্বি অয্বা’তু যামবী অবিকা আরফাউহু ফাইন আমসাকতা নাফসী ফারহামহা অইন আরসালতাহা ফাহ্‌ফায্‌হা বিমা তাহফাযু বিহী ইবা-দাকাস স্বা-লিহীন।

অৰ্থঃ হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমারই নামে আমার পার্শ্ব রাখলাম এবং তোমারই নামে তা উঠাব। অতএব যদি তুমি আমার আত্মাকে আবদ্ধ করে নাও, তাহলে তার উপর করুণা করে। আর যদি তা ছেড়ে দাও, তাহলে তাকে ঐ জিনিস দ্বারা হিফাযত কর, যার দ্বারা তুমি তোমার নেক বান্দাদের করে থাক। (বুঃ ৬৩২০ নং মুসলিম ৪/২০৮৪)

৬।

اللَّهُمَّ إنَّكَ خَلَقْتَ نَفْسِي وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা খালাকতা নাফসী অআন্তা তাওয়াফফা-হা, লাকা মামা-তুহা অমাহয়্যাহা, ইন আহয়্যাইতাহা ফাহফাযহা, অইন আমাত্তাহা ফাগফিরলাহা, আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকাল আ-ফিয়াহ।

অর্থঃ- হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি আমার আত্মাকে সৃষ্টি করেছ আর তুমিই ওকে মৃত্যু দান করবে। তোমারই জন্য ওর মরণ এবং জীবন। যদি তুমি ওকে (পৃথিবীতে) জীবিত রাখ, তাহলে তার হিফাযত কর। আর যদি ওকে মৃত্যু দাও, তাহলে ওকে মাফ কর।

হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট নিরাপত্তা চাচ্ছি। (মুঃ ৪/২০৮৩)।

৭। ডান হাত গালের নিচে রেখে শুয়ে এই দুআ পড়বে–

اللهم قنى عذابك يوم تبعث عبادك

উচ্চারণঃ-আল্লা-হুম্মা কিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাবসু ইবা-দাক।

অর্থঃ- হে আল্লাহ! যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে পুনরুত্থিত করবে, সেদিনকার আযাব থেকে আমাকে রক্ষা করো। (সিঃ সহীহাহ ২৭৫৪ নং)।

৮।

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَآوَانَا ، فَكَمْ مِمَّنْ لا كَافِيَ لَهُ وَلا مُؤْوِي

উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত্বআমানা অসাক্বা-না অকাফা-না অ আ-ওয়া-না, ফাকাম মিম্মল লা কা-ফিয়া লাহু অলা মু’বী।

অর্থঃ সেই আল্লাহর সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাদের পানাহার করিয়েছেন, তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়েছেন এবং আশ্রয় দিয়েছেন। অথচ কত এমন লোক আছে, যাদের যথেষ্টকারী ও আশ্রয়দাতা নেই। (মুসলিম)।

৯। নিদ্রার পূর্বে সূরা সাজদাহ ও সূরা মুল্‌ক পড়া উত্তম। (সঃ জামে ৪/২৫৫)

১০। সূরা কাফিরূন পাঠ করতে হয়, এতে শির্ক থেকে সম্পর্কহীনতা বর্তমান। (সহীহ তারগীব ৬০২ নং)

১১। ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’ ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লাহ’ ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’ পাঠ করলে মীযানে এক হাজার সওয়াব সংযােজিত হয়। (সহীহ তারগীব ৬০৩ নং)

১২। ওযু করে ডান কাতে শুয়ে সর্বশেষে নিম্নের দুআ পড়লে যদি ঐ রাতে মৃত্যু হয় তবে ইসলামী প্রকৃতির উপর মৃত্যু হবে-

اللَّهمَّ أسْلَمْتُ نفْسي إلَيْكَ، ووجَّهْتُ وجْهِي إِلَيْكَ، وفَوَّضْتُ أَمْري إِلَيْكَ، وألْجأْتُ ظهْرِي إلَيْكَ. رغْبَة ورهْبةً إلَيْكَ، لا ملجَأَ ولا منْجى مِنْكَ إلاَّ إلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذي أنْزَلْتَ، وبنبيِّك الَّذي أرْسلتَ

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা আসলামতু নাফসী ইলাইকা অ অজ্জাহতু অজহিয়া ইলাইক, অফাউওয়ায্বতু আমরী ইলাইক, অ আলজা’তু যাহরী ইলাইক, রাগবাতাউ অরাহবাতা ইলাইক, লা মালজাআ অলা মানজা মিনকা ইল্লা ইলাইক, আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা অবিনাবিয়্যিকাল্লাযী আরসা।

অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি আমার প্রাণ তোমার প্রতি সমর্পণ করেছি, আমার মুখমন্ডল তোমার প্রতি ফিরিয়েছি, আমার সকল কর্মের দায়িত্ব তোমাকে সােপর্দ করেছি, আমার পিঠকে তোমার দিকে লাগিয়েছি (তোমার উপরেই সকল ভরসা রেখেছি), এসব কিছু তোমার সওয়াবের আশায় ও তোমার আযাবের ভয়ে করেছি। তোমার নিকট ছাড়া তোমার আযাব থেকে বাঁচতে কোন আশ্রয়স্থল নেই। তুমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছ। তার উপর এবং তুমি যে নবী প্রেরণ করেছ তার উপর ঈমান এনেছি। (বুঃ ১১/১১২, মুঃ ৪/২০৮১)

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরও দেখুন
Close
Back to top button