‘বিশেষজ্ঞ’ শব্দের অপপ্রয়োগ

‘আল্লামা’-এর ন্যায় ‘বিশেষজ্ঞ’ শব্দেরও ঢালাও প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে متخصص (মুতাখাসসিস) আর ইংরেজি প্রতিশব্দ Specialist (স্পেশ্যালিস্ট)।

ইদানিং অনেকে একটা শাস্ত্রের ছিটেফোটা দু’চারটে কথা শিখেই নিজেকে সেই শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ (বা ইংরেজিতে স্পেশ্যালিস্ট) বলে পরিচয় দিচ্ছেন, অথচ তাদের জন্য ‘বিশেষজ্ঞ’ উপাধি প্রযোজ্য নয়। কেননা বিশেষজ্ঞ শব্দটি গঠিত হয়েছে ‘বিশেষ’ ও ‘জ্ঞ’ যোগে (বিশেষ+জ্ঞ=বিশেষজ্ঞ)।

আর অভিধানের বর্ণনা মোতাবেক বিশেষ শব্দে আধিক্য ও অসাধারণত্বের অর্থ রয়েছে আর ‘জ্ঞ’ জ্ঞান অর্থ প্রদান করে। সেমতে কোন শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ তিনি যিনি ঐ শাস্ত্রে অধিক ও অসাধারণ জ্ঞান রাখেন। এজন্যই অভিধানে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ শব্দটি বিশেষণ, যার অর্থ সুপণ্ডিত, কোন বিষয়ে যিনি উত্তমরূপে জানেন। এখানেও লক্ষ্যণীয় শুধু পণ্ডিত বলা হয়নি বলা হয়েছে সুপণ্ডিত এবং কোন বিষয়ে যিনি জানেন বলা হয়নি উত্তমরূপে জানেন বলা হয়েছে।

অতএব একটা শাস্ত্রে সাধারণত মানুষের যতটুকু জ্ঞান থাকে তার চেয়ে অধিক জ্ঞান না থাকলে, সেই শাস্ত্রে সুপণ্ডিত না হলে, সেই শাস্ত্র উত্তমরূপে না জানলে কাউকে সেই শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ বলা যেতে পারে না। তাহলে কেউ একটা শাস্ত্রের ছিটেফোটা কিছু শিখেই কীভাবে নিজেকে সেই শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করতে পারেন বা কেউ তাকে সেরূপ আখ্যায়িত করলে তিনি তা সমর্থন করতে পারেন?

ভুয়া আল্লামা দাবি করলে কী কী খারাবী দেখা দেয় সে পর্যায়ে যে কথাগুলো বলা হয়েছে এখানেও সেগুলো প্রযোজ্য। অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ না হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করা মিথ্যাচারিতা ও প্রতারণা। আর সেরূপ দাবিকে সমর্থন করে যাওয়া পাপের সমর্থন হিসেবে পাপ। তদুপরি বিশেষজ্ঞ না হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে বিশেষজ্ঞ দাবি করা হচ্ছে নিজের যে গুণ-গরিমা নেই তা দাবি করা, পূর্বে বর্ণিত হাদীছের আলোকে যা কঠিন পাপ।

আল্লামা ও বিশেষজ্ঞ প্রসঙ্গে এতটুকুই। এর চেয়ে অধিক কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
আল্লাহ আমাদেরকে ভারসাম্য দান করুন। [ওয়েবসাইট থেকে নেয়া]

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button